দাম্পত্য
জীবনে যেকোনো কারণেই কলহ হতে পারে। একেঅপরের সাথে রাগ, অভিমান এবং ক্ষোভ
এইসবই দাম্পত্যজীবনের বলতে গেলে দৈনন্দিন ব্যাপার। এমন কোনো দম্পতি খুঁজে
পাওয়া যাবে না যারা জীবনে একটিবার হলেও বড় ধরণের ঝগড়ায় লিপ্ত হননি। রাগ,
অভিমান বা ঝগড়াটা বড় বিষয় নয়। বড় বিষয় হচ্ছে এইসকল ব্যাপার কতদূর গড়াচ্ছে
সেটা।
আর যদি সেটা ডিভোর্স পর্যন্ত গড়ায় তাহলে তা অবশ্যই ভাবনার বিষয়। আবার
অনেক সময় স্বামী/স্ত্রীর মারাত্মক কিছু ভুলের কারণেও ডিভোর্স চাইতে পারেন।
কিন্তু ডিভোর্স দেয়াটাই কি সব সমস্যার সমাধান কিংবা যুক্তিসংগত? অন্য কিছুই
কি করার নেই? যদি নিজের সঙ্গীকে ডিভোর্স দিতে চান বা দেখার কথা ভেবে থাকেন
তাহলে এর পাশাপাশি আরও কিছু বিষয় ভাবুন।
আপনার ডিভোর্স চাওয়ার কারণ যুক্তিসংগত কি?
দাম্পত্য জীবনে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে টুকটাক লেগেই থাকে। কিন্তু সেই
সূত্র ধরে ডিভোর্স দেয়ার মতো বড় কিছু হওয়া স্বাভাবিক নয়। নিজেকে ভালো করে
প্রশ্ন করুন আপনার ডিভোর্স চাওয়ার কারণটাকি যুক্তিসংগত? অথবা আপনি
শুধুমাত্র অমূলক সন্দেহের বশে সঙ্গীকে ডিভোর্স দিতে চাচ্ছেন না তো? সব দিক
বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নিন।
আপনি কোনো অন্যায় করছেন না তো?
নিজেকে প্রশ্ন করুন আপনি নিজের কোনো অন্যায় কাজকে প্রশ্রয় দিতে সঙ্গীর
সাথে সংসার ভাঙতে চাচ্ছেন কি না। আপনি যদি নিজে সঙ্গীর সাথে অন্যায় করে
নিজেই সঙ্গীকে ডিভোর্স দিতে চান তাহলে সমস্যায় আপনি নিজেই জড়িয়ে যাবেন।
সুতরাং নিজের দোষত্রুটি সম্পর্কে ভেবে দেখুন।
ডিভোর্সের পরবর্তী পদক্ষেপ কি হবে?
একটিবার ভেবে নিয়েছেন কি সঙ্গীকে ডিভোর্স দেয়ার পর আপনি কি করবেন? নিজের
ও পরিবারের এবং নিজের সংসারটির ভবিষ্যতের কথা ভেবে দেখুন। যদি সব কিছু
সামলে নিয়ে এগিয়ে যেতে পারেন তবে এরকম কঠিন কোনো সিদ্ধান্তে আসা উচিত,
নতুবা নয়।
কোর্ট আপনার ডিভোর্স নাকচ করে দিলে কি করবেন?
অনেক সময় যুক্তিসংগত কারণ না থাকার কারণে কোর্ট থেকে ডিভোর্সের আবেদন
নাকচ করে দিতে পারে। আবার ওপর পক্ষ ডিভোর্স দিতে না চাইলে এবং উপযুক্ত কারণ
দেখালে তার পক্ষেও কোর্টের রায় চলে যেতে পারে। এইক্ষেত্রে কি করবেন তা আগে
থেকে ভেবে দেখুন। যদি সত্যিই আবার তার সাথে সংসার করতে হয় তখন কিন্তু
পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়ে যেতে পারে। সুরতাং ভেবে চিন্তে কাজ করুন।
সন্তানের ব্যাপারে ভেবেছেন কি?
যদি আপনাদের সন্তান থেকে থাকে তবে ডিভোর্সের ব্যাপারটি আরও ভালো করে
ভেবে দেখুন। কারণ এখানে শুধুমাত্র আপনাদের জীবন নয় আপনাদের সন্তানের জীবনও
জড়িত। আপনাদের ডিভোর্সের পর সন্তানের ভবিষ্যৎ কি হবে সে চিন্তা মাথায়
রাখুন। নিজেদের সামান্য ভুলের কারণে ডিভোর্স দিয়ে আপনারা আলাদা হয়ে গেলেন
কিন্তু আপনাদের ভুলের বোঝা টানতে হবে আপনাদের সন্তানকেই।
সমাজ সংসারের মুখোমুখি হতে পারবেন তো?
অনেক সময় ডিভোর্সের পর সামাজিকভাবে অনেককে হেয়প্রতিপন্ন করা হয়। এর
ভুক্তভুগি বেশীরভাগ মেয়েরাই হয়ে থাকেন। তবে পুরুষদেরও সমস্যায় পরতে হয়। যদি
আপনি যুক্তিসংগত কারণে এবং সত্যিকার অর্থে নিজের ও সংসারের ভালোর জন্যও
ডিভোর্স দিয়ে থাকুন না কেন আপনাকে কথা শুনতেই হবে। তখন শক্ত থাকতে পারবেন
তো? সব দিক ভেবে চিন্তে তবেই কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছান।
0 comments:
Post a Comment