বাংলাদেশেই আন্তর্জাতিকমানের প্রযুক্তিবিদ তৈরি হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। ‘বাংলাদেশে মেধাবী তরুণ প্রজন্মের কিশোর-কিশোরীদের ঘাটতি নেই’ উল্লেখ করে তরুণ এই মন্ত্রী বলেছেন, “১৯ বছর বয়সে মার্ক জাকারবার্গ ফেইসবুক তৈরি করেছেন। আমি বিশ্বাস করি এই তরুণ-তরুণীদের মধ্যেই ভবিষ্যতের জাকারবার্গ লুকিয়ে আছে।”
‘জানুক সবাই, দেখাও তুমি’ স্লোগানে শুক্রবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্জন হলে ‘জাতীয় হাইস্কুল প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতার’ ঢাকা মহানগর আঞ্চলিক পর্বে বিজয়ীদের পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন পলক। বিশ্ব ‘কাঁপিয়ে’ দেওয়ার মত প্রযুক্তিবিদ তৈরির লক্ষ্যেই এই প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়া শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকদের ধন্যবাদ জানান।
পলক বলেন, বর্তমান যুগ হচ্ছে তথ্যপ্রযুক্তির। তথ্যপ্রযুক্তি ভালমত না জানলে ভালো কিছু অর্জন করা যাবে না। তরুণরা গড়বে দেশ, ডিজিটাল হবে বাংলাদেশ। প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, “তোমরা দেশকে নিয়ে স্বপ্ন দেখবে, স্বপ্ন দেখবে নিজেদের আর বিশ্ব নিয়ে।”
শুক্রবার সকালে কার্জন হল চত্বরে বেলুন উড়িয়ে এই প্রতিযোগিতার উদ্বোধন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল অনুষদের ডিন অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম। সারা দেশকে রংপুর, রাজশাহী, খুলনা, সিলেট, চট্টগ্রাম, বরিশাল, ঢাকা মহানগর ও ঢাকা বিভাগ (গোপালগঞ্জ) অঞ্চলে ভাগ করে ‘কুইজ’ ও ‘প্রোগ্রামিং’ ক্যাটাগরিতে এই প্রতিযোগিতা হচ্ছে।
ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ‘জুনিয়র’, নবম থেকে এসএসসি পরীক্ষার্থীদের ‘সেকেন্ডারি’ এবং একাদশ থেকে এইচএসসি পরীক্ষার্থী ও পলিটেকনিক চতুর্থ সেমিস্টারের শিক্ষার্থীদের ‘হায়ার সেকেন্ডারি’ ক্যাটাগরিতে ভাগ করে কুইজ প্রতিযোগিতা নেওয়া হচ্ছে। আর প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতায় ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ‘জুনিয়র’ এবং দশম থেকে এইচএসসি পরীক্ষার্থী ও পলিটেকনিক চতুর্থ সেমিস্টারের শিক্ষার্থীদের ‘সিনিয়র’ ক্যাটাগরিতে ভাগ করা হয়েছে।
আইসিটি বিষয়ে ৩০ মিনিট এবং কম্পিউটার প্রোগ্রামিংয়ে দুই ঘণ্টার প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় বসতে হয়েছে শিক্ষার্থীদের। কুইজ প্রতিযোগিতায় ঢাকা মহানগরীর বিভিন্ন বিদ্যালয়ের ৫০০ শিক্ষার্থী অংশ নেয়। এদের মধ্যে বিজয়ী ১২০ জনের হাতে সনদ ও মেডেল তুলে দেন অতিথিরা। আর প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়া ১০০ শিক্ষার্থীর মধ্য থেকে ৪০ জনকে বিজয়ী ঘোষণা করে তাদের হাতেও সনদ তুলে দেওয়া হয়।
ঢাকা মহানগর আঞ্চলিক পর্বে প্রতিযোগিতায় বিজয়ীরা আগামী ২৯ মে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) জাতীয় প্রতিযোগিতায় অংশ নেবেন। ১৫ মে সিলেট ও খুলনা, ১৬ মে গোপালগঞ্জ, ১৮ মে চট্টগ্রাম, ২২ মে রাজশাহী, ২৩ মে রংপুর এবং আগামী ২৩ মে বরিশাল অঞ্চলের প্রতিযোগিতা হবে। এসব আঞ্চলিক পর্বের প্রতিযোগিতায় বিজয়ীরা জাতীয় প্রতিযোগিতায় অংশ নেবেন।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের উদ্যোগে আয়োজিত এই প্রতিযোগিতায় বেসরকারি মোবাইল অপারেটর রবি আজিয়াটা এবং আনোয়ার ইস্পাত লিমিটেড সহযোগিতা করেছে। প্রতিযোগিতা আয়োজনে সহযোগিতা করেছে বাংলাদেশ ওপেন সোর্স নেটওয়ার্ক ও ধানসিঁড়ি কমিউনিকেশন। আর অ্যাকামেডিক সহযোগিতায় ছিল কোডমার্শাল এবং দ্বিমিক কম্পিউটার স্কুল। www.nhspc.org এবং www.facebook.com/nhspcbd ওয়েবসাইটে এই প্রতিযোগিতার বিস্তারিত জানা যাবে বলে অনুষ্ঠানে জানানো হয়েছে।
বাংলাদেশ ওপেন সোর্স নেটওয়ার্কের সাধারণ সম্পাদক মুনির হাসানের পরিচালনায় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের অতিরিক্ত সচিব হারুন অর রশিদ, রবির ভাইস প্রেসিডেন্ট ইকরাম কবীর, ধানসিঁড়ি কমিউনিকেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক অভিনেত্রী শমী কায়সার সমপানী অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।
0 comments:
Post a Comment