২০১২ সালে টেলিটক এবং ২০১৩ সালে অন্যান্য মোবাইল ফোন অপারেটর দেশে থ্রিজি সেবা চালু করার পর ইন্টারনেট ব্যবহার ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। তিন বছরে দেশে মোট থ্রিজি ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা এসে দাঁড়িয়েছে ১ কোটি ১৫ লাখে। টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন বিটিআরসির কাছে মোবাইল ফোন অপারেটরদের জমা দেয়া সর্বশেষ তথ্যের ভিত্তিতে থ্রিজি সেবার গ্রাহক সংখ্যা বিবেচনায় শীর্ষে রয়েছে গ্রামীণফোন।
বিটিআরসি সূত্রে জানা গেছে, গত ফেব্রুয়ারি শেষে গ্রামীণফোনের থ্রিজি সেবার গ্রাহক সংখ্যা ৪৬ লাখ ২ হাজার ৯৭৫, রবির ২৭ লাখ ৪৩ হাজার, বাংলালিংকের ১৯ লাখ, এয়ারটেলের ১০ লাখ ২৮ হাজার ও টেলিটকের ১২ লাখ ২৯ হাজার ছাড়িয়েছে। এ সময় দেশে ইন্টারনেট সেবার গ্রাহক সংখ্যা ছিল ৪ কোটি ৩৪ লাখ ১৯ হাজার। এর মধ্যে দেশের ৬ মোবাইল ফোন অপারেটরের টুজি ও থ্রিজি প্রযুক্তির ইন্টারনেট সেবার গ্রাহক সংখ্যা ৪ কোটি ১৯ লাখ ৫৯ হাজার। একই সময়ে ওয়াইম্যাক্স প্রযুক্তির ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর সংযোগ সংখ্যা দাঁড়ায় ২ লাখ ১৫ হাজার। আর ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার (আইএসপি) ও পাবলিক সুইচড টেলিফোন নেটওয়ার্ক (পিএসটিএন) অপারেটরদের ইন্টারনেট সেবার আওতায় রয়েছে ১২ লাখ ৪৫ হাজার।
২০১৩ সালের ৮ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত নিলামের মাধ্যমে থ্রিজির তরঙ্গ বরাদ্দ পায় গ্রামীণফোন, বাংলালিংক, রবি ও এয়ারটেল। পরবর্তীতে একই বছরের ৭ অক্টোবর গ্রামীণফোন, ২১ অক্টোবর বাংলালিংক, ৩০ অক্টোবর রবি ও ৭ নভেম্বর এয়ারটেল বাণিজ্যিকভাবে এ সেবা চালু করে। আর রাষ্ট্রায়ত্ত মোবাইল ফোন অপারেটর টেলিটক পরীক্ষামূলকভাবে থ্রিজি সেবাদান শুরু করে আরো এক বছর আগে। ২০১২ সালের ১৪ অক্টোবর সেবাটি চালু করে টেলিটক। থ্রিজি চালুর আড়াই বছরে টেলিটকের গ্রাহকসংখ্যা বেড়েছে চারগুণ।
উল্লেখযোগ্য বিনিয়োগ না থাকলেও ভাল মানের ডাটা এবং গতি নিশ্চিত করাতে এই অগ্রগতি হয়েছে বলে মনে করছে অপারেটরটি। ২০১২ সালের ১৪ অক্টোবর টেলিটকের থ্রিজির পরীক্ষামূলক সেবা উদ্বোধনের সময় এই অপারেটরের গ্রাহকসংখ্যা ছিল ১৪ লাখের কাছাকাছি, যা চলতি বছরের এপ্রিলের শেষনাগাদ প্রায় ৫৪ লাখে দাঁড়িয়েছে। চলতি বছরের ৪ মাসেই টেলিটকের গ্রাহকসংখ্যা বেড়েছে ৫ লাখ ৫০ হাজার। প্রায় এক বছর আগে বেসরকারি অপারেটরদের কাছ থেকে থ্রিজি সেবা দেওয়ার সুযোগ পেয়েছিল রাষ্ট্রায়ত্ত টেলি
টক।
বর্তমানে দেশের প্রায় সব বড় বড় শহরে টেলিটকের থ্রিজি সেবা পৌঁছে গেছে জানিয়ে টেলিটকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক গিয়াস উদ্দিন আহমেদ বলেন, আগামী ৩ থেকে ৪ মাসের মধ্যে দেশের প্রতিটি জেলায় মানসম্মত থ্রিজি সেবা পৌঁছে দেওয়ার কাজ শুরু করতে যাচ্ছি। এ কাজ শেষ হলে গ্রাহকসংখ্যা আরো বৃদ্ধি পারে বলে আশা করি। দেশের বেসরকারি অপারেটরদের তুলনায় রাষ্ট্রায়ত্ত এই প্রতিষ্ঠানটির বিনিয়োগ কম উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমাদের বিনিয়োগ মাত্র ৩ হাজার কোটি টাকা। এই বিনিয়োগ নিয়েই আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। টেলিটকের এই অগ্রগতিতে প্রভাবকের ভূমিকা রেখেছে থ্রিজি সেবা, যা আগামীতে আরো বৃদ্ধি পাবে।
নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসির হিসাবে, টেলিটকসহ বাংলাদেশে মোট ৬টি মোবাইল অপারেটরের গ্রাহকসংখ্যা গত মার্চ মাস নাগাদ ১২ কোটিতে ৩৬ লাখ ৯০ হাজারে দাঁড়িয়েছে। অপর দিকে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা মার্চ মাস নাগাদ ৪ কোটি ৪৬ লাখ ২৫ হাজার। এর মধ্যে মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহারকারী ৪ কোটি ৩১ লাখ ৬৭ হাজার। এবং ফেব্রুয়ারি শেষে দেশে মোট থ্রিজি ইন্টারনেট ব্যবহারকারি ১ কোটি ১৫ লাখ।

0 comments:
Post a Comment