![]() |
বাংলাদেশ টেলিকম নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) ইন্টারন্যাশনাল
গেটওয়ে (আইজিডব্লিউ) প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে বাংলাদেশে আসা আন্তর্জাতিক কল
পর্যবেক্ষণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে । এ জন্য গত ২৪ মার্চ একটি মনিটরিং ব্যবস্থা চালু
করে বিটিআরসি। তবে এই পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থা চালু করতে গিয়ে শুরুতেই হোঁচট খায়
সংস্থাটি। বিটিআরসির ওই সিদ্ধান্তের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে গত ৪ মে হাইকোর্টে রিট
করেন ডিবিএল টেলিকম, বাংলাটেল ও বিজিটেল নামে তিনটি
প্রতিষ্ঠান। কিন্তু বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম সমন্বয়ে
গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ ১৪ মে বিটিআরসির সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে করা রিটটি খারিজ করে
দেন। এর ফলে বাংলাদেশে আসা আন্তর্জাতিক কল পর্যবেক্ষণ করতে বিটিআরসির আর কোনো বাধা
রইল না।
আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ
আইনজীবী আজমালুল হোসেন কিউসি ও এম কে রহমান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। বিটিআরসির পক্ষে ছিলেন
অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মুরাদ রেজা ও ব্যারিস্টার খন্দকার রেজা-ই-রাকিব।
আদেশের পর মুরাদ রেজা সাংবাদিকদের বলেন, আন্তর্জাতিক
কল গ্রহণের লাইসেন্সের মধ্যে শর্ত রয়েছে, কল অপারেটিংয়ের
জন্য যে কোনো সময় বিটিআরসি যে কোনো নির্দেশনামূলক বিষয় নির্ধারণ করতে পারবে।
মনিটরিং ব্যবস্থা চালুর বিষয়টিও এরই একটি অংশ। এর বিরুদ্ধে একটি রিটটি আদালত খারিজ
করে দিয়েছেন। এর ফলে বাংলাদেশে আসা আন্তর্জাতিক কল মনিটর করতে বিটিআরসির আর কোনো
বাধা রইল না।
প্রসঙ্গত, দেশে
আন্তর্জাতিক কলের পরিমাণ দিনে গড়ে ১২ কোটি মিনিট ছাড়িয়েছে। বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ
নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) বলছে, অবৈধ কল আদান-প্রদান বন্ধে
বিভিন্ন পদক্ষেপের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক কল টার্মিনেশন চার্জ কমানোর প্রভাবে গত
কয়েক মাসে কলের পরিমাণ বেড়েছে। কমিশন সূত্রে জানা গেছে, প্রতিদিন
আসা আন্তর্জাতিক ইনকামিং কলের এ গড় কয়েক বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। ২০১১ সালে দেশে আসা
আন্তর্জাতিক কলের দৈনিক সংখ্যা ছিল গড়ে ৪ কোটি ৬১ লাখ মিনিট। ২০১২ সালে যা সাড়ে ৩
কোটি, ২০১৩ সালে ৪ কোটি ৬৫ লাখ ও ২০১৪ সালে ৭ কোটি মিনিট
ছিল। চলতি বছর তা বেড়ে ১২ কোটি মিনিট ছাড়িয়েছে।
গত বছরের সেপ্টেম্বরে পরীক্ষামূলক ছয় মাসের জন্য
আন্তর্জাতিক কল টার্মিনেশন চার্জ কমায় সরকার। মাসটির শুরুতে দৈনিক গড়ে আন্তর্জাতিক
কল ছিল সাড়ে ৫ কোটি। ওই মাসের মাঝামাঝি তা বাড়তে শুরু করে। সে সময় আন্তর্জাতিক
অন্তর্গামী কলের পরিমাণ ছিল গড়ে ৮ কোটি মিনিট। এরই ধারাবাহিকতায় বর্তমানে প্রতিদিন
১২ কোটির বেশি কল আসছে।
বৈধ পথে আসা আন্তর্জাতিক কলের পরিমাণ বাড়াতে গত বছরের
জুলাইয়ে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের কাছে কল টার্মিনেশন চার্জ কমানোর বিষয়ে
প্রস্তাব দেয় বিটিআরসি। এতে কলপ্রতি ১ দশমিক ৫ সেন্ট নির্ধারণ করার প্রস্তাব করা
হয়। একই বছরের ১৮ সেপ্টেম্বর আন্তর্জাতিক কল টার্মিনেশন রেট ছয় মাসের জন্য
পরীক্ষামূলকভাবে কমিয়ে আনার বিষয়ে নির্দেশনা জারি করে বিটিআরসি। পাশাপাশি কল
আদান-প্রদান সংশ্লিষ্ট সব প্রতিষ্ঠানের আয়ের ভাগাভাগির অংশও অস্থায়ী ভিত্তিতে
পুনর্নির্ধারণ করা হয়।
উল্লেখ্য, দেশে
আইজিডব্লিউ লাইসেন্সধারী প্রতিষ্ঠান ২৯টি। এর মধ্যে কার্যক্রম চালু রয়েছে ২৩
প্রতিষ্ঠানের। ২০০৮ সালে নিলামের মাধ্যমে চার প্রতিষ্ঠানকে এ লাইসেন্স দেয়া হয়। আর
২০১২ সালের এপ্রিলে নতুন ২৫টি প্রতিষ্ঠান আইজিডব্লিউ লাইসেন্স পায়।
0 comments:
Post a Comment